স্বদেশ ডেস্খ: দল থেকে বহিষ্কৃত শতাধিক নেতাকে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর মাঝে চাঙাভাব ফিরিয়ে এনে দলকে আরও শক্তিশালী করাই এর প্রধান লক্ষ্য। গত এক দশকে সারা দেশে ইউনিয়ন থেকে শুরু করে জেলা-মহানগরের যেসব নেতাকে বহিষ্কার করা হয়েছে, তাঁদের একটি খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এতে স্থান পাচ্ছে প্রায় ৫০০ জন নেতার নাম। প্রয়োজনীয় যাচাইবাছাই শেষে প্রথম পর্বে গুরুতর অপরাধ বা বড় ধরনের কোনো দলীয় শৃঙ্খলা করেননি, এমন শতাধিক নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হবে। তবে ৫ আগস্টের পর যাঁদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখলসহ দলের শৃঙ্খলাবিরোধী অভিযোগ আছে, তাঁদের ক্ষমা করা হবে না। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবর এরই মধ্যে দুই শতাধিক নেতার নাম পাঠানো হয়েছে। বাকিগুলোও পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। বিএনপির সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে। এ বিষয়ে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অনেকে তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য দলের কাছে আবেদন করেছেন। এ ব্যাপারে অনুসন্ধান করে রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে। তবে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়ার মতো বিষয়। কেউ অন্যায় বা ভুল করলে কিংবা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করলে দলের বিধি অনুযায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে। আবার শোধরানোর চেষ্টা করলে তাঁকে সুযোগও দেওয়া হয়ে থাকে। একই বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ বলেন, ‘বহিষ্কৃতদের মধ্যে যাঁদের বড় ধরনের কোনো অপরাধ নেই, দলের নেতৃত্ব বিশ্বাস করেন এবং অন্য কোনো দলেও যাননি, তাঁদের বিএনপিতে ফেরত আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যাচাইবাছাই শেষে এসব নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হতে পারে। তা ছাড়া আমরা অনেক নেতাকে দেখেছি মাসের পর মাস, এমনকি তারও বেশি সময় ধরে বহিষ্কারাদেশ মাথায় নিয়েও দলের আন্দোলন কর্মসূচিতে ঝাঁপিয়ে পড়তে।’ সংশ্লিষ্ট অপর একটি সূত্রে জানা গেছে, আগামী নির্বাচনের আগে দল পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে সারা দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ত্যাগী আর রাজপথের নেতা-কর্মী দিয়ে কমিটি ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া শেষ করতে চাইছে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে বহিষ্কৃত নেতাদের দলে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। চলতি মাসে বহিষ্কৃত নেতাদের নামের তালিকা তৈরি করতে দলের দপ্তরকে নির্দেশনা দেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তাঁর নির্দেশনা পেয়ে এক দশকেরও বেশি সময়ে দল থেকে বহিষ্কৃত নেতাদের নামের তালিকা তৈরি করছে দলটির কেন্দ্রীয় দপ্তর। এসব তালিকায় বহিষ্কৃত নেতার নাম, পদবি, ঠিকানা, বহিষ্কারের কারণ ও বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের জন্য সুপারিশকারীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। দলীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, বহিষ্কৃতদের তালিকার পর রাগ-ক্ষোভ ও অভিমানে যেসব নেতা নিষ্ক্রিয় রয়েছেন, তাঁদের পাশাপাশি দলের কথিত সংস্কারপন্থি নেতাদের তালিকা করা হবে। পর্যায়ক্রমে তাদেরও দলে নিয়ে সক্রিয় করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন এমন নেতাদের আপাতত বিবেচনা করা হচ্ছে না বলেও জানা গেছে।